যারা একজনের নিকট থেকে পণ্য ক্রয় করে আরেকজনের নিকট বিক্রয় করে তাদেরকে Reseller (রিসেলার) বলা হয়। Reseller (রিসেলার) শব্দটি ইংরেজী Re যার অর্থ ‘পুনরায়‘ ও Seller যার অর্থ ‘বিক্রয়কারী‘ শব্দযোগ গঠিত। তাহলে Reseller (রিসেলার) শব্দের প্রকৃত হলো, যারা একজন Seller (সেলার) বা বিক্রয়কারীর নিকট থেকে কোন পণ্য ক্রয় করে তা ‘পুনরায়‘ (Re) আরেকজনের নিকট বিক্রয় (Sell) করে তাদেরকে Reseller (রিসেলার) বা ‘পুনরায় বিক্রয়কারী‘ বল হয়।
কি ধরনের পণ্য রিসেল করা যায়?
সবধরেনর পণ্যই রিসেল (Resell) করা যায়। ‘ব্যবসা‘ সিস্টেমটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আসলে রিসেলিং (Reselling) করাকেই বোঝায়, কারণ ব্যবসায়ীগণ বড় শহর থেকে পণ্য ক্রয় করে ছোট শহরগুলোতে পুনরায় তা বিক্রয় করে থাকে। এক্ষেত্রে সব ধরনের পণ্যই রিসেলযোগ্য। ব্যক্তিকে শুধু সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিনি কোন সেলারের (বিক্রেতার) পণ্য কিভাবে রিসেল (Resell) করবেন।
ডিজিটাল ও ফিজিক্যাল পণ্যের মধ্যে পার্থক্য কী?
ডিজিটাল পণ্য বলা হয় IT রিলেটেড সার্ভিসগুলোকে যেমন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, এ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস ইত্যাদিকে। বর্তমানে দেশ বিদেশে অনেক IT ফার্ম আছে যাদের এইসব ডিজিটাল সার্ভিস রিসেল করে খবু সহজেই উল্লেখযোগ্যরকম মুনাফা অর্জন করা যেতে পারে ।
অন্যদিকে ফিজিক্যাল পণ্য হলো মানুষের দৈনন্দিন জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য-সামগ্রী। বর্তমানে অনলাইনে দেশি-বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা আগ্রহীগণকে ফিজিক্যাল পণ্যের হোয়াইট লেবেল (White Label) রিসেলিং এর সুবিধা প্রদান করে থাকেন। ক্রেতা সাধারণ খুব সহজেই সেইসব সার্ভিস বা পণ্য তাদের মাধ্যমে নিজের ক্রেতাগণের নিকট বিক্রয় করতে পারেন। বিশ্বখ্যাত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলী এক্সপ্রেস এবং বাংলাদেশের শপআপ এই ধরনের ড্রপশিপিং বা রিসেলার সার্ভিস প্রদান করে থাকেন।
ফিজিক্যাল পণ্য সামগ্রী রিসেলিং পদ্ধতি কিভাবে কাজ করে?
ই-কমার্সের ফিজিক্যাল গুডস বা পণ্য রিসেলিং করাকে বাংলাদেশে ‘রিসেলার‘ বলা হলেও USA ও চীনসহ অন্যান্য দেশে তা ‘ড্রপ শিপিং‘ (DropShipping) নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে একজন রিসেলার যখন ক্রেতা-১ এর নিকট থেকে কোন পণ্যের অর্ডার পাবেন তখন তিনি মূল বিক্রেতার ওয়েবসাইটে নিজের ড্রপশিপিং বা রিসেলার একাউন্ট থেকে ক্রেতা-১ এর নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে পণ্যটির অর্ডার করবেন। এক্ষেত্রে মূল বিক্রেতা যদি হোয়াইট লেবেল রিসেলিং বা ড্রপ শিপিং সার্ভিস প্রদান করে থাকেন তাহলে তিনি ক্রেতা-১ কে রিসেলারগণের ব্র্যান্ড নেম ব্যবহার করে পণ্যটির সরবারহ করবেন।
হোয়াইট লেবেল রিসেলার প্রদানকারী বলতে কী বোঝায়?
যে সব রিসেলার সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান রিসেলারগণের ক্রেতাগণকে পণ্য সরবরাহের সময় নিজেদের প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা ব্যবহার না করে রিসেলারগণের প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা ব্যবহার করেন তাদেরকে হোয়াইট লেবেল (White Label) রিসেলার প্রদানকারী বলা হয়। হোয়াইট লেবেল (White Label)-এর উদ্দেশ্য যেন, রিসেলারগণের ক্রেতাগণ মূল বিক্রেতা সম্বন্ধে অবহিত না হন এবং নিজেদের কোম্পানী/ব্র্যান্ডের প্রচার ও প্রসার করতে পারেন।
অনলাইনে ই-কমার্স পণ্যের সফল রিসেলার কিভাবে হওয়া যেতে পারে?
অনলাইনে একটি ওয়েবসাইট ও একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে খুব সহজেই রিসেলার ব্যবসায় সফলতা পাওয়া যেতে পারে। এজন্যে সুদৃঢ় মনোবল ও সঠিক কর্ম-পরিকল্পনা নিয়ে একটি ওয়েবসাইটে পণ্যগুলি যথাযথভাবে ডিসপ্লে করতে হবে এবং ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সেসব পণ্যের গুণাগুণ ও ক্রয় করার লিংক পরিচিতজন ও জনাসাধারণের নিকট শেয়ার করতে হবে, এবং সেই সাথে আরো যা কিছু করা যেতে পারে,
- শুধুমাত্র যেসব পণ্যেের গুণগত মান সম্বন্ধে আপনি নিশ্চিত তা রিসেল করুন, এর ফলে একজন ক্রেতা পুনরায় আপনার নিকট থেকে ক্রয় করার সম্ভাবনা বাড়বে,
- পণ্যের অস্বাভাবিক বেশি দাম নির্ধারণ না করে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে তা রিসেল করার চেষ্টা করুন,
- নিজের আত্নীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবগণের মধ্যে নিয়মিত আপনার পণ্যগুলি সম্বন্ধে প্রচার করুন, মনে রাখবেন রসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, ” যদি কেউ চাই তার রিযিক বাড়ানো হোক, তবে সে যেন তার আত্নীয়দের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখে”,
- ব্যবসায়ে সততা অবলম্বন করুন ফলে ভবিষ্যতে একই ক্রেতা পুনরায় আপনার নিকট থেকে ক্রয় করার সম্ভাবনা বাড়বে।
কিভাবে একটি রিসেলিং ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানাবেন?
খুব সহজেই একটি রিসেলিং বা যেকোন ধরনের ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানো যায়। অনেকেই এটাকে খুব ব্যয়বহুল একটি বিষয় মনে করেন কিন্তু আসলে তা নয়। বর্তমানে ক্লাউড টেকনোলজির যামানায় এতো বেশি এই ধরনের সার্ভিস প্রোভাইডার আছে যে এটা শুধু আপনার সিদ্ধান্তের বিষয়। আপনার পরিচিত ও পছন্দনীয় যে কারো কাছেই আপনি এ বিষয়ে সহযোগিতা পেতে পারেন। মনে রাখবেন একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানোর জন্যে আপনার প্রয়োজন ৩টি জিনিষ একটি ডোমেইন যার বাৎসরিক মূল্য ৮৫০ টাকা প্রায় এবং একটি ওয়েব হোস্টিং যার বাৎসরিক মূল্য ১০০০ টাকা প্রায় অর্থাৎ মোট খরচ বাৎসরিক ১৮৫০ টাকা। এখন যেহেতু আপনি ওয়েবসাইট বানাতে জানেন না তাই ৩য় আরেকটি যা লাগবে তা এমন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যারা আপনাকে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে দিবেন, যার খরচ নির্ভর করবে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে আপনার সম্পর্কের উপর, এটা বিনামূল্য থেকে যেকোন পরিমাণ হতে পারে। আপনি যদি কোনরকম ডেভেলপমেন্ট কস্ট ছাড়াই একটি ভাল মানের ই-কমার্স ওয়েবসাইট চান তাহলে ই-কমার্স হোস্টের রেডি টু ইউজ রেন্ট এ শপ প্ল্যানটি বিবেচনা করতে পারেন, প্ল্যানটিতে পাবেন ফ্রি ডোমেইন ও হোস্টিংসহ রেডি টু ইউজ অবস্থায় একটি পূর্ণাঙ্গ ই-কমার্স ওয়েবসাইট।